বিভিন্ন ইস্যুতে সরব থাকার জন্য পরিচিত অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। তাঁর মন্তব্য নিয়ে প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম হয়। এবার তিনি জানালেন, গতকাল শনিবার থেকে একটি পক্ষ তাঁকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট বলে আখ্যা দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করা জরুরি মনে করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন তিনি এবং পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
বাঁধন জানান, দ্রুততম সময়ে জাতীয় নির্বাচন চেয়ে তাঁর ফেসবুক পোস্ট ঘিরেই তাঁকে ‘র’-এর এজেন্ট বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ফেসবুকে দেওয়া তাঁর সেই পোস্টে লেখা ছিল, ‘দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি চাই, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন যেন দ্রুত সময়ে অনুষ্ঠিত হয়। আমি সেই দলকে ভোট দিব, যারা উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে সমঅধিকার নিশ্চিত করবে। এখন সময় এসেছে আরও ন্যায়সঙ্গত, সাম্যবাদী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক একটি সমাজের দিকে এগিয়ে যাওয়ার—যেখানে ন্যায্যতা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে এবং দেশটি সব নাগরিকের জন্য সেরা একটি দেশ হয়ে উঠবে।’
আজ রোববার দুপুরে তিনি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের কথা বলছে। বিএনপিও চাইছে দ্রুততম সময়ে যেন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে আমি যখন নির্বাচন নিয়ে পোস্ট দিলাম, তিনটি বিষয় একই সূত্রে মিলিয়ে আমাকে “র”–এর এজেন্ট বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভারত, বিএনপিও দ্রুত নির্বাচন চাইছে, আমি বললেই র–এজেন্ট। অথচ বিষয়টা মোটেও এ রকম কিছু নয়। এটা নাগরিক হিসেবে আমার চাওয়া।’
বাঁধন বলেন, ‘প্রথম আমি র–এর এজেন্ট হয়েছিলাম “খুফিয়া” ছবির সময়। এরপর সিআইএ এজেন্ট হলাম। তারপর আমার এক বন্ধু বলল, আমি নাকি মোসাদের এজেন্ট! এখন সবকিছু শেষ, কিছুতেই কিছু যখন করতে পারছে না, তখন আমি নির্বাচন চাইলাম বলে, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলছি বলে এবং উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে সমঅধিকার চাইছি বলে, আবার আমি র–এর এজেন্ট। আমার ভোট চাওয়ায় নাকি বিএনপিকে সমর্থন করছি। পুরো ব্যাপারটা আমার কাছে অদ্ভুত ঠেকেছে।’
এসব নিয়ে বাঁধন একটি ফেসবুক পোস্টও দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘২০২১ সালে যখন বলিউডের একটি সিনেমা “খুফিয়া”তে কাজ করলাম, তখন আমি ছিলাম একজন গর্বিত “র” এজেন্ট। সিনেমায় সহ-অভিনেতা হিসেবে ছিলেন টাবু। কিন্তু এরপরই ঘটনায় মোড় নেয়, যখন আমাকে সিনেমার প্রিমিয়ারে যেতেও বাধা দেওয়া হলো।’
এরপর তিনি তাঁর ভারতের ভিসা বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘আমার ভিসা একবার–দুইবার নয়, পাঁচবার ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রত্যাখান করা হয়। কারণ হিসেবে তারা ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সঙ্গে একটি ছবি দেখায় এবং এ বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানায়। এরপর আমি দেশের প্রভাবশালী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলি, যারা আমার বন্ধু, তারা পুরো বিষয়টি শোনার পর এক মাসের সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা পাই।’
পোস্টের শেষে বাঁধন লিখেছেন, ‘কী অদ্ভুত এক সমাজে বাস করছি আমরা। যখন কেউ নিজের দেশকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসে না, তখন ধরে নেয়—আর কেউও ভালোবাসে না।’ তিনি উল্লেখ করেন, এই পোস্টটি কেবলই ভাবনার খোরাক দেওয়ার জন্য।