সেনাবাহিনী নয়, সহায়ক প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ডিএনসিসি

আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী যুক্ত হচ্ছে—ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের এমন বক্তব্য নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এ ধরনের কোনো কার্যক্রমে তারা যুক্ত নয় এবং ভবিষ্যতেও এমন কোনো পরিকল্পনা নেই।

এই প্রেক্ষাপটে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, এটি শুধুই একটি ভুল–বোঝাবুঝি। তিনি জানান, সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সহায়ক প্রতিষ্ঠান থেকে সহায়তা নেওয়া হচ্ছে, সেনাবাহিনীকে নয়।

তবে ১৯ মে প্রচারিত একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে প্রশাসক বলেছিলেন, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমরা সেনাবাহিনীকে এবার কাজে লাগাব। দিস ইজ দ্য ফার্স্ট টাইম দে উইল বি ডিপ্লয়।’

সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রশাসকের বক্তব্যে দাবি করা হয়েছে, কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী নিয়োগ করা হবে। অথচ সেনাবাহিনী এ বিষয়ে অবগত নয় এবং সম্পৃক্ত হওয়ারও কোনো পরিকল্পনা নেই। এতে আরও বলা হয়, দেশের সার্বভৌমত্ব ও জননিরাপত্তায় কাজ করাই তাদের দায়িত্ব। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশা নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মাধ্যমেই হওয়া উচিত।

সিটি করপোরেশনের ফেসবুক পেজে ‘সময়ের কথা’ শিরোনামের একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের লিংক শেয়ার করা হয়, যেখানে প্রশাসক বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা কমিটি হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করব আর্মিকে ডিপ্লয় করার। ময়লা কালেকশনের জন্য এখনো কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। আর্মির মাধ্যমেই প্রসেসে নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দিস ইজ দ্য ফার্স্ট টাইম দে উইল বি ডিপ্লয়… এটা একটা নতুন জায়গায় যাবে।’ লোকবল সংকট প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আর্মির সাপোর্ট একটা বড় স্ট্র্যাটেজিক মুভ হবে আমাদের।’

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের ওষুধ ভালো, সমাধানও আছে। কিন্তু মনিটরিংয়ে গাফিলতি আছে। সেই জায়গাতেই আর্মিকে আনতে হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মশা মারতে কামান কেনা হয়েছে, কিন্তু দাগানোর লোক নেই—তাদের বোঝানোর জন্যই এখন আর্মি আনতে হচ্ছে।’ এই কাজে বিএমটিএফ ও আর্মির সংশ্লিষ্ট ইউনিট কাজ করবে বলে জানান তিনি।

সেনাবাহিনীর বিবৃতি নিয়ে জানতে চাইলে প্রশাসক বলেন, ‘আমরাও ফেসবুকে জবাব দিয়েছি। সেনাবাহিনীর সহায়ক প্রতিষ্ঠান যেমন বিএমটিএফ, ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডের কাছ থেকে সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। এটা কেউ ভুলভাবে সেনাবাহিনী বলেছে। সেনাবাহিনীর কাজ দেশকে রক্ষা করা—তারা একদম ঠিক বলেছে।’

এদিকে, রাত পৌনে আটটার দিকে ডিএনসিসির জনসংযোগ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানায়, কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী নয়, বরং তাদের সহায়ক প্রতিষ্ঠান বিএমটিএফের সহযোগিতা নেওয়া হবে। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপিত ওই বক্তব্যের জন্য ভুল–বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। ডিএনসিসি ঈদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিজেরাই পালন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *