টানা ভারী বর্ষণে রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। রোববার সকাল থেকে অন্তত তিনটি স্থানে পাহাড় ধসের পর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে ৬৭২ জনকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি পাহাড়ি এলাকায় মাইকিং করে সর্তকতা জারি রাখা হয়েছে।
এছাড়া উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, জেলার বিভিন্ন রাস্তায় অন্তত ১৫টি স্থানে ধসের ঘটনা ঘটেছে।
এরই মধ্যে জেলা সদর, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল ও নানিয়ারচর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাঙামাটিতে ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং সেখানে আশ্রয় নেওয়া মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সকালে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মঘাছড়ি এলাকায় এবং লংগদুর করল্যাছড়িতে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসন, সড়ক বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে যান চলাচল সচল করে।
জুরাছড়ি উপজেলায় গ্রামীণ সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় মাইনী নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করেছে। দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের হেডকোয়ার্টার এলাকায় সড়ক পানিতে ডুবে গেছে।
ফলে রাঙামাটি-লংগদুর সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নে পাহাড়ি ঢলে প্রায় ২০০টি পরিবার প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার জানান, পৌর এলাকার আশপাশের কয়েকটি গ্রামে পানি উঠে গেছে এবং উপজেলায় ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজনের উপস্থিতি কম।
রাঙামাটি সদর উপজেলার ইউএনও রিফাত আসমা জানান, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০০টি পরিবার।
সওজের রাঙামাটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, সড়কে ধসের ঘটনাগুলো দ্রুত অপসারণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, জরুরি টিম প্রস্তুত রয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরতদের জন্য পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরিয়ে আনতে মাইকিং করা হচ্ছে।