অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে একটি মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত অবস্থায় তাঁর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম জানান, রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে সমু চৌধুরীকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগেও মাজারে এসেছিলেন, কিন্তু তাঁকে কেউ চিনতে পারেননি। এবারও তিনি একাকী সময় কাটাতে মাজারে গিয়েছিলেন।
বুধবার রাতে তিনি মোটরসাইকেলে করে ঢাকা থেকে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাজারের একটি গাবগাছের নিচে তাঁকে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। মাজারের পাশে থাকা আল মামুন হৃদয় তাঁর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করলে তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।
স্থানীয়রা এবং পুলিশ তাঁকে মানসিকভাবে অসুস্থ মনে করেন। তাঁকে দেখতে ঘটনাস্থলে ভিড় জমায় নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। বিকেলে পুলিশ তাঁকে থানায় যেতে বললেও তিনি রাজি হননি। লোকসমাগম বাড়তে থাকায় মাজার এলাকায় সেনাবাহিনীও অবস্থান নেয়। তখন সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন এবং সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।
রাত ৯টার দিকে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর ভাষ্য থেকে জানা যায়, তিনি মাজারভক্ত মানুষ এবং আগেও এখানে এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন, কারণ ওই দিনটি তাঁর মতে গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত ছিল। ফেসবুকে ছবিটি ছড়িয়ে পড়ায় ঘটনাটি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।’
সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে তিনি অভিনয়জীবন শুরু করেন এবং উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোরে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু তাঁর মা জীবিত রয়েছেন। তিনি যশোরেই বসবাস করেন।