‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় গঠিত কমিটির প্রধান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, অধ্যাদেশটির কিছু কিছু অংশ পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে বলে তাঁর মনে হয়েছে।
আজ সোমবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি তখন (অধ্যাদেশটি অনুমোদনের সময়) বিদেশে ছিলাম। আমি আইনটি প্রণয়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। তো পরবর্তীকালে যখন আমি আইনটি দেখেছি, তারপর আমার কাছে মনে হয় যে অবশ্যই এটা পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে কিছু কিছু জায়গায়।’
তিনি আরও বলেন, সরকার কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশটি করেনি। ‘আমি শুধু একটা কথা বলতে পারি, সরকার কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে আইনটি করেনি। অসৎ উদ্দেশ্যে করা না হলেও কোনো আইনে এমন বিধান থাকতে পারে, যেটা যাঁরা আইনের সাবজেক্ট, তাঁদের কাছে মনে হতে পারে, তাঁরা বিড়ম্বনা ও হয়রানির শিকার হতে পারেন।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেটি আমরা স্বীকার করি যে এ রকম সম্ভাবনা এই আইনে থাকতে পারে।’
পর্যালোচনা কমিটির প্রধান জানান, আজ বিকেল চারটায় কমিটির বৈঠক হবে। বৈঠকে আন্দোলনরত কর্মচারীদের দাবিগুলো কীভাবে বিবেচনা করা হবে, তা ঠিক করা হবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব কমিটি একটি প্রতিবেদন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করবে।
তিনি বলেন, ‘কমিটি শুধু প্রতিবেদন দেবে, সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা কমিটির নেই।’
এ অবস্থায় ধৈর্য ধরে কর্মসূচি দেওয়ার জন্য আন্দোলনরত কর্মচারীদের প্রতি অনুরোধ জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘কমিটির কাজ যদি পছন্দ না হয়, তাহলে (কর্মসূচি) দেন। সরকারি কাজে যেন ব্যাঘাত না হয়, সেটি লক্ষ্য রাখার জন্য কর্মচারীদের প্রতি অনুরোধ করি।’
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে ঈদের আগে থেকেই সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁরা বিক্ষোভ, কর্মবিরতি ও স্মারকলিপি দেওয়ার মতো কর্মসূচি পালন করেছেন।
ঈদের ছুটি শেষে অফিস খোলার এক দিন পর আজ আবার সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনরত কর্মচারীরা। বিক্ষোভ শেষে আজ সরকারের আরও তিন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা রয়েছে।
ঈদের ছুটির আগে সরকার ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে। সচিবালয়ের কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ।