আবাসন সংকটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমানের সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ আলোচনা’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
তারা জানিয়েছেন, আলোচনায় সন্তুষ্ট হলেও এখনই ক্লাসে ফিরছেন না। অধ্যক্ষ কামরুল আলমের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠকের পর ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে সোমবার সকাল ১১টায় শিক্ষার্থীদের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যায়। তাদের সঙ্গে ছিলেন অধ্যক্ষ কামরুল আলম। নির্ধারিত বৈঠকে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পরিবর্তে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমানের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে দুপুর ২টার দিকে কে-৭৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে এবং মন্ত্রণালয় মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনেছে। বাজেট বাস্তবায়নের সময় ও বিকল্প আবাসনের বিষয়ে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। তবে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে এখনো স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা পাননি তারা।
নোমান বলেন, “আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে চাই। কিন্তু সেই প্রস্তুত পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি। বৈঠকের সময়ই এনাটমি বিভাগের দেয়াল ভেঙে পড়ে। কোথায় শিফট করা হবে, সে বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আমরা সেটার অপেক্ষায় আছি।”
বৈঠকে অংশ নেওয়া কে-৮১ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী দাবিগুলো মেনে নিয়েছেন। অন্য দুটি মেডিকেল কলেজে হল লাগবে না, সেই দুটি হল ঢাকা মেডিকেল কলেজকে দেওয়া হবে। আগামী একনেক বৈঠকে অনুমোদনের পর কাজ শুরু হবে। আগামী জুলাই মাসে নবাগত শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসনের কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল প্রিন্সিপাল স্যারের সঙ্গে বৈঠকের পর ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেব।”
আবাসন ও নিরাপদ ক্যাম্পাসসহ পাঁচ দফা দাবিতে শনিবার সকাল থেকে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো:
১) নতুন ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণের জন্য দ্রুত বাজেট পাস
২) নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আবাসন নিশ্চিত
৩) নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের জন্য আলাদা বাজেট পাস
৪) আবাসন ও অ্যাকাডেমিক বাজেট পৃথকভাবে অনুমোদন ও বাস্তবায়ন
৫) সব কার্যক্রমের অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপনের জন্য প্রতিনিধি নির্বাচন
আন্দোলনের মধ্যেই শনিবার কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ, রোববারের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়। তবে শিক্ষার্থীরা হল না ছেড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
রোববার সকালে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকেও দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস না পাওয়ায় আন্দোলন অব্যাহত রাখেন তারা। কে-৭৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন এবং ঝুঁকিপূর্ণ হল পরিদর্শনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতি না পেলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।
এরপর সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে বসেন শিক্ষার্থীরা।