ইরান কাতার ও ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশ—কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও বাহরাইন—সোমবার রাতে নিজেদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। এর ফলে দেশগুলোতে সব ধরনের বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এই পরিস্থিতিতে ঢাকা থেকেও ওই চার দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ফ্লাইট স্থগিত থাকবে।
সোমবার মধ্যরাতে এক বার্তায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, “চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও বাহরাইন কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে তাদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে। সংশ্লিষ্ট দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত দোহা, দুবাই, আবুধাবি, কুয়েত এবং বাহরাইন হয়ে আগমন ও বহির্গমনকারী সকল বাণিজ্যিক ফ্লাইট বাতিল থাকবে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এই পরিস্থিতিতে দোহা, দুবাই, আবুধাবি, কুয়েত এবং বাহরাইন রুটে ভ্রমণের পরিকল্পনায় থাকা যাত্রীদের নিজ নিজ এয়ারলাইন্স অফিসের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ করে পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী ভ্রমণের সময়সূচি পুনর্নির্ধারণ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। পরবর্তী আপডেট জানিয়ে দেওয়া হবে।”
বিপাকে কাতারগামী বিমানের ফ্লাইট
কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার কারণে হঠাৎ করে আকাশসীমা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট। দোহাগামী উড়োজাহাজটি মাঝপথে জানতে পারে কাতারে ঢোকা যাবে না। এরপর সেটি গন্তব্য পরিবর্তন করে ওমানের মাস্কাটে অবতরণ করে। সেখান থেকে জ্বালানি নিয়ে যাত্রীসহ ফ্লাইটটি আবার ঢাকায় ফিরে আসবে বলে এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে গত কয়েকদিন ধরেই বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ইরান ও ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশ আকাশসীমা আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রী ও মালবাহী উড়োজাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক রুটে অনেক বড় এয়ারলাইন্স কার্যত চলাচল স্থগিত করেছে। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থার ওপরও।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম রওশন কবীর জানান, দোহাগামী ফ্লাইটটি আগেই রওনা দিয়ে মাঝপথে জানতে পারে আকাশসীমা বন্ধের তথ্য। পরে সেটি মাস্কাটে গিয়েছিল, সেখানে জ্বালানি নেওয়ার পর সেটি ঢাকায় ফিরে আসবে।
তিনি আরও জানান, সোমবার রাত দেড়টায় দোহা হয়ে জেদ্দা যাওয়ার কথা ছিল বিমানের একটি ফ্লাইটের। তবে দোহায় না গিয়ে সরাসরি জেদ্দায় যাওয়ার জন্য যাত্রী ও মালামাল তোলা হয়েছে সে অনুযায়ী।