রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত গঠন

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক এক সেনা কর্মকর্তার বিষয়ে তদন্ত আদালত গঠন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুক্রবার দুপুরে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, তদন্ত শেষে আদালতের সুপারিশ অনুযায়ী সেনা আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে ওই সেনা কর্মকর্তার নাম বা পদবি প্রকাশ করা হয়নি। তবে এর আগে সেনা সদর আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ‘মেজর সাদিকুল হক আওয়ামী লীগ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন’—সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন আলোচনার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন এবং মেজর সাদিক বর্তমানে সেনা হেফাজতে আছেন।

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি কনভেনশন সেন্টারে একটি ‘গোপন বৈঠক’ আয়োজনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ নিষিদ্ধ সহযোগী সংগঠনের ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, ৮ জুলাই সকালে ওই কনভেনশন সেন্টারে ৩০০-৪০০ জন ব্যক্তি গোপনে বৈঠকে অংশ নেন এবং সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়। এছাড়া শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে সারা দেশে লোক জড়ো করে শাহবাগ মোড় দখলের পরিকল্পনার কথাও উঠে আসে।

ডিএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, মামলার তদন্তে গ্রেপ্তারকৃত আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের দুই নেতার জবানবন্দির ভিত্তিতে মেজর সাদিকুল হকের নাম উঠে আসে। এরপর তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযোগ পাওয়ার পর সেনাবাহিনী বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। গত ১৭ জুলাই মেজর সাদিককে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে আটক করে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানায় আইএসপিআর।

তদন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। এছাড়া তার কর্মস্থল থেকে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে আরেকটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে।

আইএসপিআর বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি অরাজনৈতিক, শৃঙ্খলাপরায়ণ ও পেশাদার প্রতিষ্ঠান। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট কোনো সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেনাবাহিনী তার সদস্যদের মধ্যে পেশাদারিত্ব, শৃঙ্খলা এবং সাংবিধানিক দায়িত্ববোধ বজায় রাখার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।