সিঙ্গাপুরে টানা নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে পিএপির ছয় দশকের শাসন অব্যাহত

সিঙ্গাপুরের ক্ষমতাসীন দল পিপল’স অ্যাকশন পার্টি (পিএপি) ১৪তম জাতীয় নির্বাচনে টানা নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে তাদের ছয় দশকের শাসনের ধারা অব্যাহত রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাবে অর্থনৈতিক অস্থিরতা মোকাবেলার প্রস্তুতির মধ্যে পিএপির নতুন প্রধানমন্ত্রী ভোটারদের জোরালো সমর্থন পেল।

১৯৬৫ সালে সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতার আগ থেকে ক্ষমতায় থাকা পিএপি এবারও নিরঙ্কুশ জয় পাবে বলেই ধারণা ছিল সবার। হয়েছেও তাই, দলটি পার্লামেন্টের ৯৭টি আসনের মধ্যে ৮৭টিতে জয় পেয়েছে।

দেশটিতে মাত্র নয় দিনের নির্বাচনী প্রচারে জীবনযাত্রা ব্যয় বৃদ্ধি ও আবাসনের চাহিদাই আলোচনার কেন্দ্রে ছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

১৯৫৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের প্রতিটি নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে পিএপি। প্রায় প্রত্যেকবার পার্লামেন্টের ৯০ শতাংশের বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন দলটির প্রার্থীরা।

কিন্তু ২০২০ সালের নির্বাচনে সে ধারায় কিছুটা ছেদ পড়ে। সেবার পিএপির ভোট কমে দাঁড়ায় ৬০ দশমিক ১ শতাংশে, আর বিরোধী ওয়ার্কার্স পার্টি পায় রেকর্ড ১০টি আসন—যা ছিল সিঙ্গাপুরের ইতিহাসে বিরোধীদের সবচেয়ে বড় সাফল্য, আর পিএপির জন্য সবচেয়ে খারাপ ফলাফল।

লরেন্স ওং (৫২) গত বছর পিএপির দীর্ঘদিনের নেতা লি সিয়েন লুংয়ের কাছ থেকে দায়িত্ব নেন। এবার তার নেতৃত্বেই ৯৭টি আসনে লড়েছে পিএপি। বিরোধীদল ওয়ার্কার্স পার্টি লড়েছে মাত্র ২৬ আসনে।

তাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের প্রথম নির্বাচনে ওং চেষ্টা করেছেন আগের বারের ভোটের হার উন্নত করতে। আর তাতে তিনি কিছুটা হলেও সফল হয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, পিএপি ৬৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে; এর মাধ্যমে তারা আগের বারের নির্বাচনের ফলাফলকে ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।

নির্বাচনের ফলাফল এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। সিঙ্গাপুরের ৬০ লাখ মানুষ পিএপি ছাড়া অন্য কোনো দলের সরকারের শাসনের সঙ্গে পরিচিত নয়।

বিশ্বের ব্যয়বহুল শহরগুলোর একটি সিঙ্গাপুর। বর্তমানে নগর রাষ্ট্রটির ভোটারদের প্রধান উদ্বেগের জায়গা—জীবনযাত্রার ব্যয় ও বাসস্থান সঙ্কট। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের অভিঘাতে বাণিজ্যনির্ভর অর্থনীতিতে অস্থিরতার শঙ্কাও তাদের তাড়া করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *