বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, আয়তন বৃদ্ধি ও পরিবহন সংকট নিরসসহ তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশন করছেন ছয় শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে উপাচার্য মোহাম্মদ তৌফিক আলম বৃহস্পতিবার রাতভর তাদের পাশে অবস্থান করেন।
রাত ১টার দিকে অনশনস্থলে গিয়ে উপাচার্য মশারি টাঙিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকেন এবং সকাল ৯টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। এর আগে রাত ১২টার দিকে একাডেমিক ভবনের নিচে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানান, দাবিগুলো যৌক্তিক এবং তা বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই কার্যক্রমের অগ্রগতি দৃশ্যমান হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। তবে শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থী তানজিদ শাহ জালাল ইমন বলেন, “শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙতে রাজি না হওয়ায় কষ্ট ভাগ করে নিতে ভিসি আমাদের পাশে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন।” সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপাচার্যের শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা ছবিগুলো মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। আরেক শিক্ষার্থী তাহসিন হাসান রাকিব বলেন, “আমরা গর্ব করে বলতে পারি, আমাদের এমন একজন ভিসি আছেন, যিনি শুধু দায়িত্বশীল নন মানবিকতারও উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।”
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে অনশনে অংশ নেন ইংরেজি বিভাগের শারমিলা জামান সেঁজুতি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অমিয় মণ্ডল, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের তাজুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের আবু বকর সিদ্দিক, দর্শন বিভাগের পিয়াল হাসান, লোকপ্রশাসন বিভাগের তামিম আহমেদ রিয়াজ ও আইন বিভাগের শওকত ওসমান স্বাক্ষর।
অনশনরত শিক্ষার্থী তাজুল ইসলাম বলেন, “আমাদের দাবি নিয়ে দুইবার সংবাদ সম্মেলন করেছি। এমনকি প্রতীকী কর্মসূচিও পালন করেছি। কিন্তু কেউ যোগাযোগ করেনি। দাবি বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।”
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো:
· বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ধাপের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। পরবর্তী একনেকে বাধ্যতামূলকভাবে অনুমোদন এবং কাজ শুরুর বিষয়ে সরকার, ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি।
· বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ বাকি দেড়শ একর জমি দ্রুত সময়ের মধ্যে অধিগ্রহণ, কোন স্থান থেকে কত একর জমি অধিগ্রহণ, কতদিনের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে যৌক্তিক পরিকল্পনাসহ প্রজ্ঞাপন জারি।
· স্বতন্ত্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতভাগ পরিবহন নিশ্চিত। কতদিনের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে তার পরিকল্পনা প্রকাশ এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বিআরটিসি বাসের মাধ্যমে শতভাগ পরিবহন নিশ্চিত করা।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, “তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াও ধাপে ধাপে এগোচ্ছে।”