মানিকগঞ্জে ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ ২১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও সাবেক পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খানসহ ২১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি মেহেরাব হোসাইন এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকেও আসামি করা হয়েছে বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজিজুল হক অপু জানান।

আজিজুল হক মামলার বরাতে বলেন, গত ১৮ জুলাই সকাল ১০টায় মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবনের সামনে থেকে ছাত্র-জনতা একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলটি খালপাড় ব্রিজের দিকে গেলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওঁৎ পেতে থাকা আসামিরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় এবং হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

হামলায় মো. আরমান হোসাইন, হাসনা হেনা, মাহফুজ হোসাইন ও তন্ময়সহ অনেকে গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে আরমান ও হাসনাকে ব্রিজের ওপর ফেলে ধারালো রামদা ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। প্রথম দফার হামলার পর দুপুর ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মানরা এলাকায় শিক্ষার্থীরা আবারও জমায়েত হলে, স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ মালেক ও সাবেক পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খানের নেতৃত্বে ও হুমকিতে ছাত্রলীগ ও আওয়ামীপন্থী বাহিনী আবারও হামলা চালায় বলে অভিযোগে বলা হয়।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আহত শিক্ষার্থীরা মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক ও কর্মীরা তাদের ফিরিয়ে দেন। পরে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে সেখানেও একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। হাসপাতালের উপপরিচালক ও মামলার ৩২ নম্বর আসামি জহিরুল করিম ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় আহতদের জোরপূর্বক বের করে দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম জাহিদ, সাবেক সাংসদ নাঈমুর রহমান দুর্জয়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়া সাবেক জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী, চিকিৎসক ও পুলিশের সাবেক কর্মকর্তার নামও রয়েছে আসামির তালিকায়।