ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিকের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়েছে, সেখানে তার কফিনে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে আহমদ রফিকের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার মরদেহ বারডেম হাসপাতালে দান করা হবে বলে জানিয়েছে তার নামে গড়া আহমদ রফিক ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আহমদ রফিকের কফিন শোকযাত্রার মাধ্যমে নেওয়া হবে ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ও গবেষণার জন্য আহমদ রফিক তার মরণোত্তর দেহ দান করে গেছেন।
বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে আহমদ রফিকের জীবনাবসান হয়। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্রনিক কিডনি ফেইলিওর, আলঝেইমার্স রোগ, পারকিনসন্স রোগ, ইলেকট্রোলাইটস ইমব্যালেন্স, বেডশোর ও ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিলেন তিনি।
ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী আহমদ রফিকের জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুর গ্রামে। মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর রসায়নে পড়তে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু ফজলুল হক হলের আবাসিক সুবিধা না পাওয়ায় পরে ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে।
১৯৫২ সালে তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় ফজলুল হক হল, ঢাকা হল এবং মিটফোর্ডের ছাত্রদের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে চলার কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি সভা-সমাবেশ ও মিছিলে ছিলেন নিয়মিত। ১৯৫৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের আন্দোলনকারী ছাত্রদের মাঝে একমাত্র তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
১৯৫৫ সালের শেষ দিকে প্রকাশ্যে বেরিয়ে এসে পড়াশোনায় ফেরেন আহমদ রফিক। এমবিবিএস ডিগ্রি নিলেও চিকিৎসকের পেশায় যাননি। লেখালেখিতেই জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। ১৯৫৮ সালেই আহমদ রফিকের প্রথম প্রবন্ধের বই ‘শিল্প সংস্কৃতি জীবন’ প্রকাশিত হয়।
এরপর থেকে সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রবন্ধ রচনায় নিজেকে নিবেদিত করেন। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, রবীন্দ্রত্ত্বাচার্য উপাধিসহ বহু সম্মাননা।