শাহবাগ, ঢাকা – মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা ও অন্যান্য দাবিতে চতুর্থ দিনের মত অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বুধবার রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন।
বেলা পৌনে ২টার দিকে শহীদ মিনার থেকে পদযাত্রা শুরু করে তারা শাহবাগ মোড়ের দিকে আগান। দুপুর ২টার দিকে মোড় অবরোধ করা হয়। শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। তবে শিক্ষক-কর্মচারীরা ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে গিয়ে মোড় অবরোধ করেন, যার ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষক-কর্মচারীরা দাবি করেছেন, মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে ১,৫০০ টাকা করা এবং উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ করা হোক। এ দাবিতে সরকারকে দুপুর ১২টার মধ্যে সময় দিয়েছিলেন তারা। সময় শেষ হওয়ার পর পূর্বঘোষিত ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয় রোববার থেকে। বুধবার তারা চতুর্থ দিনের মত শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন।
জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক ও এনটিআরসিএ সুপারিশ প্রাপ্ত শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরাম-বিটিএফের সভাপতি মো. হাবিবুল্লাহ্ রাজু বলেন, “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ফিরে যাবো না।”
মঙ্গলবার বিকেলে তারা শহীদ মিনার থেকে সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে হাই কোর্টের মাজার গেইটের সামনে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। রাত ৮টা পর্যন্ত অবস্থান করার পর তারা শহীদ মিনারে ফিরে যান।
শুক্রবার দুপুর ১২টার মধ্যে সরকার দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
রোববার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হলেও দুপুরে পুলিশের অনুরোধে তারা শহীদ মিনারে চলে যান। শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি অংশ প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে, জলকামানের পানি ব্যবহার করে এবং লাঠিপেটা করে তাদের সরায়।
শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশি হামলার’ প্রতিবাদে সোমবার থেকে সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে। তবে ৫ অক্টোবর ঘোষণা প্রকাশ্যে আসার পর শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন শুরু করেন। পরে ৬ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগে বাড়িভাড়া অন্তত দুই থেকে তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব পাঠায়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। পূর্বে ১,০০০ টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা ১,৫০০ টাকা করা হয়েছে।
এছাড়া, আগে বছরে দুইবার ২৫ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পেতেন তারা। গত মে মাসে বাড়ানোর পর বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।