আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ জুলাই অভ্যুত্থানে যুক্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের কাছে মিন্টো রোডের প্রবেশ মুখে সমাবেশ শেষে তারা শাহবাগে গিয়ে অবস্থান নেন।
ওই সমাবেশ থেকেই শাহবাগ মোড় অবরোধের ঘোষণা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, “ইন্টেরিমের কানে আমাদের দাবি পৌঁছায়নি। তাই আমরা সমাবেশস্থল থেকে শাহবাগ অবরোধে যাচ্ছি। দাবি না আদায় পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করব।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের খবর নিয়ে আলোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে সরকারপ্রধানের বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেন এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে একদল বিক্ষোভকারী। তাতে সংহতি জানান জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার জুমার পর মিন্টো রোডের প্রবেশ মুখে মঞ্চ তৈরি করে সেখানে সমাবেশ করেন তারা। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিসহ প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে অংশ নেন নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “১০০টা ফেরাউন একসঙ্গে করলেও একটা হাসিনা পাওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগকে কেন রাজনৈতিক দল বলা হয়? আমরা শুনছি প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
এই বক্তব্য চলাকালে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, “সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এ বিষয়ে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে।” এছাড়া জনদাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রচলিত আইনের অধীনে ছাত্রলীগকে ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
সরকারের পক্ষ থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগের কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগ প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনের বিষয়ে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর।