আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার বাদ জুমা যমুনার পূর্ব পাশে ফোয়ারার সামনে বড় জমায়েতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেখানে ইতিমধ্যে মঞ্চ তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘কয়েকটি কথা’ শিরোনামে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “একটি দলের এক্টিভিস্টরা বারবার লীগ নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ছাত্ররা রাজি ছিল না বলে দাবি করছেন, যা মিথ্যা। প্রথম মিটিং ছিল আমার, সেখানে আমি আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। নাহিদ-আসিফও আমার পক্ষে ছিলেন। দলের পক্ষ থেকে যুক্তি তুলে ধরলে এক উপদেষ্টা জবাবে বলেন, ‘ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের মতো পশ্চাতপদ উদাহরণ আমরা আমলে নিতে পারি কিনা’। এখন সেই যুক্তিদাতা উপদেষ্টার পক্ষেই এক্টিভিস্টরা স্ট্যাটাস দিচ্ছেন ছাত্রদের বিভ্রান্ত করতে।”
তিনি আরও লিখেছেন, “দুজন আইন ব্যাকগ্রাউন্ডের উপদেষ্টা (একজন প্রয়াত) ও সংস্কৃতি উপদেষ্টাও আমাদের বক্তব্যের পক্ষে ছিলেন। গতকাল বিকালেও কথা হয়েছে। উক্ত উপদেষ্টা বলেছেন, দলের বিচারের প্রভিশন শিগগিরই যুক্ত করা হবে। তাঁকে ধন্যবাদ।”
মাহফুজ আলম তাঁর পোস্টে দাবি করেন, “মিথ্যা বলা বন্ধ করুন। ঘোষণাপত্র নিয়ে আপনাদের দুই মাসের টালবাহানা নিয়ে আমরাও বলব। ছাত্রদের দল ঘোষণার সময় আপনারা দলীয় বয়ানের একটি ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলেন। এখন সেটাও হতে দিতে চান না। আমাদের দোষও কম না। আমরা আপনাদের দলীয় প্রধানের আশ্বাসে আস্থা রেখেছিলাম।”
পুনশ্চ অংশে তিনি লেখেন, “আমরা নির্বাচন পেছাতে চাই না। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবেই।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা যদি মনে করেন ছাত্ররা নিজেদের আদর্শ ও পরিকল্পনা নিতে পারে না, বরং বাইরে থেকে নির্দেশ পেলেই কিছু করে, তাহলে হয় ছাত্রদের খাটো করে দেখছেন, নয়তো তাঁদের ডিলেজিটিমাইজ করতে চাইছেন। আমরা আগস্ট থেকেই জাতির জন্য ভালো যা মনে করেছি, সবার পরামর্শ নিয়েই করেছি। উক্ত দলকে আমরা সবচেয়ে বেশি ভরসা করেছি। ফল পেয়েছি প্রতারণা। এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষকে দায়ী করা হচ্ছে।”
পোস্টের শেষদিকে মাহফুজ আলম লেখেন, “আমরা উক্ত দল ও তাদের প্রধানকে বিশ্বাস করতে চাই। আশা করি, উনি লীগ নিষিদ্ধ ও ঘোষণাপত্র প্রকাশে দেশপ্রেমিক ও বাস্তবভিত্তিক ভূমিকা রাখবেন। উক্ত দল যেন ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে দেশের পক্ষে, অভ্যুত্থানবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্য গড়তে নেতৃত্ব দেয়। দেশপ্রেমিক ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে শক্তি হিসেবে নেতৃত্ব দিলে ছাত্ররাও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তাঁদের সঙ্গে থাকবেন। ঐক্যবদ্ধ হোন, নেতৃত্ব দিন। এ প্রজন্মকে হতাশ করবেন না। এ প্রজন্মই এ দেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ।”