নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিচারক ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নাম ও স্বাক্ষর জাল করে অভিযোগপত্র পাঠানো হচ্ছে আইন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে। এসব চিঠিতে যাদের নাম রয়েছে, তারা বলছেন— অভিযোগ সম্পর্কে তারা কিছুই জানেন না। ফলে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং এসব চিঠির উৎস ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিআরটিএ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)–এর মাঠ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও বদলির অভিযোগ এনে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে একাধিক চিঠি পাঠানো হয়েছে। এসব চিঠিতে সাধারণ নাগরিকদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিআরটিএর এক সহকারী পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“নামে-বেনামে চিঠি দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাঠানো হচ্ছে। এগুলোর কারণে মানসিক চাপে থাকতে হয় এবং কর্মকর্তারা যথাযথভাবে কাজ করতে পারছেন না। যাচাই-বাছাই ছাড়া ব্যবস্থা নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।”
বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কর্মরত কয়েকজন বিচারকের নাম ও স্বাক্ষর ব্যবহার করে আইন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে একটি প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়েছে।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন,
“আমাদের সমিতির কেউ এসব চিঠি পাঠায়নি। অভিযোগকারীদের নাম দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্টরা এসব বিষয়ে কিছু জানেন না। বিষয়টি সমিতির মিটিংয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং চিঠির মাধ্যমে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি।”
তিনি জানান, সমিতিতে রুহুল আমিন নামের ৬৪ জন সদস্য রয়েছেন। যাঁদের কেউই চিঠির বিষয়ে অবগত নন বলে দাবি করেছেন।
জেলা রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ
মুন্সিগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার মো. রমজান খানের বিরুদ্ধে গত ২৯ এপ্রিল বদলি বাণিজ্যের অভিযোগে চিঠি পাঠানো হয়। এতে তিনজন নকলনবিশের নাম ও স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে।
তাদের একজন আশরাফুল ইসলাম বলেন,
“চিঠিতে আমার ভুয়া স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। আমি কোনো অভিযোগ করিনি। জানার পর আমি আইন মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন,
“রেজিস্ট্রার মো. রমজান খান একজন সৎ কর্মকর্তা। আমি তাঁর বিরুদ্ধে চিঠি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।”
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, অভিযোগপত্রের সঙ্গে তিনি জড়িত নন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
মন্ত্রণালয়ের অবস্থান
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের বলেন,
“আমি বিষয়টি আগে ভালোভাবে বুঝে নিই, তারপর মন্তব্য করব। এখন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য নেই।”