বাংলাদেশে ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে’ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায় ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন।
জয়সওয়াল বলেন, “বাংলাদেশ বিষয়ে, বাংলাদেশের নির্বাচন বিষয়ে আমাদের অবস্থান আমরা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছি এবং তা ধারাবাহিকভাবে করে আসছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা ও ম্যান্ডেট নির্ধারণ করতে হবে।”
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ভারত প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ইতিবাচক এবং গঠনমূলক সম্পর্ক চায়, যা দুই দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও স্বার্থরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় আধিপত্যকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে উল্লেখ করেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, সরকার পরিচালনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দায়িত্ব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের। তিনি বলেন, “এ ধরনের বক্তব্য এলে মনে হয়, আপনি সরকার চালানোর চ্যালেঞ্জগুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে অন্য দিকে ঘোরাতে চাইছেন। অন্যদের এবং বাইরের বিষয়গুলোকে দায়ী করাটা সমস্যার সমাধান নয়।”
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কিছুটা টানাপড়েনের মধ্যে পড়ে। শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য ফেরত চাওয়ার পাশাপাশি, দিল্লিতে বসে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির প্রচেষ্টার অভিযোগ এনেছে ইউনূস সরকার।
এদিকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত সরকার পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও অপতথ্য’ এবং ‘অতিরঞ্জিত প্রচারণা’র অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ সরকার।
দুই দেশের মধ্যে বিবৃতি ও কূটনীতিক তলবের পাল্টাপাল্টি ঘটনার পাশাপাশি সীমান্ত ইস্যু এবং শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরেও উত্তেজনা তৈরি হয়। কূটনৈতিক টানাপড়েন ছাড়াও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার দিক দিয়েও বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি হয়। সবশেষ ১৭ মে ভারত স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য আমদানি বন্ধের ঘোষণা দেয়।