জাতীয় পুরুষ হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিসিবি সভাপতির পদে নাটকীয় পরিবর্তন নিয়ে কথা বলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি জানান, বিসিবি সভাপতি হিসেবে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ফারুক আহমেদকে দায়িত্ব হারাতে হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ফারুক আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। পরদিন রাত ১১টায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) তার পরিচালক পদে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে। পরিচালক না থাকায় সভাপতির পদও স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়। এরপর নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাউন্সিলর ও পরিচালক পদে মনোনীত হয়ে পরদিন বিকেলেই বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হন আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
এই দ্রুত প্রক্রিয়াকে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে ব্যতিক্রম হিসেবে দেখছেন অনেকেই। ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, “এটা কোনো শাস্তি নয়। আমরা দেখেছি, নতুন নেতৃত্ব আসার পর প্রত্যাশামতো ক্রিকেটের উন্নয়ন হয়নি। বিপিএলে অনিয়ম, দায়িত্বে অবহেলা এবং সামগ্রিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “বিসিবির ৯ পরিচালকের মধ্যে ৮ জন অনাস্থা জানিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে বোর্ডে কাজের পরিবেশ ছিল না। ফলে ক্রিকেটের অবনতির দায় এড়ানোর উপায় ছিল না।”
বাফুফের সাফল্যের তুলনায় ক্রিকেটের বর্তমান অবস্থাকে হতাশাজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাফুফে ফুটবলে নতুন উন্মাদনা তৈরি করতে পেরেছে। কিন্তু ক্রিকেটে অব্যবস্থাপনা এবং পতনের ধারা চোখে পড়েছে।”
বিপিএল নিয়ে তৈরি হওয়া বিব্রতকর পরিস্থিতির কথাও তুলে ধরেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। তার মতে, খেলোয়াড়দের মতো কর্মকর্তাদেরও পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হওয়া উচিত।
ফারুক আহমেদ বলেছিলেন, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি।对此 ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি, কিন্তু তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের মতো কিছু দেননি।”
তিনি আরও জানান, এনএসসি নিয়ম অনুযায়ী যাকে মনোনয়ন দেবে, তাকেই পরিচালক করা হবে। মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় সভাপতির পদও বাতিল হয়েছে।
নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমিনুল ভাইকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম না। আমি কেবল জানতে চেয়েছিলাম তিনি দেশের জন্য কাজ করতে চান কি না। তিনি রাজি হওয়ায় আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এই সিদ্ধান্ত দেশের অন্যান্য ফেডারেশনগুলোর জন্যও বার্তা বলে মনে করেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “প্রতি বছর সব ফেডারেশনকে প্রগ্রেস রিপোর্ট ও অডিট রিপোর্ট দিতে হবে। শুধু খেলোয়াড় নয়, কর্মকর্তারাও পারফর্ম না করলে পরিবর্তন হবে।”
তিনি স্বীকার করেন, বিসিবির কিছু পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের অপসারণ সম্ভব নয়। তবে আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
“আগামী অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন হবে। প্রকৃত সংগঠক ও ক্রিকেট প্রেমীদেরই বোর্ডে দেখতে চাই,” বলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।