শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার কাকরাইলে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ইয়াসিন মৃধা (১৫)। ভেদরগঞ্জ থানার ওসি মো. পারভেজ আহম্মেদ সেলিম জানান, নিহত ইয়াসিন ভেদরগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হানিফ মৃধার ছেলে এবং স্থানীয় গৈড্যা এম এস ফাজিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
ইয়াসিনের মা ফরিদা ইয়াসমিন অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। ছেলের মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ৫ জুন সন্ধ্যা ৭টায় ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে পন্নী কাজি, এনাম, সোহান, লিখন বেপারী, মবিন ও ইয়াসিনসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। সংঘর্ষের সময় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।
সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ভেদরগঞ্জ থানার এসআই হাকিম ও কনস্টেবল জাহিদও আহত হন।
আহত ইয়াসিনকে প্রথমে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। আট দিন চিকিৎসার পর শুক্রবার তার মৃত্যু হয়। ইয়াসিনের মৃত্যুর খবরে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়।
ছাত্রদলের একটি পক্ষ হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
ইয়াসিনের মা ফরিদা ইয়াসমিন অভিযোগ করেন, পৌর যুবদলের এক নেতার নেতৃত্বে ১০-১২ জন মিলে তার ছেলেকে মারধর করে। ইয়াসিনের ফুফু জোস্না বেগম বলেন, তার ভাতিজা রাজনীতি করত না, তাকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি দায়ীদের ফাঁসি দাবি করেন।
পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য একলাছ উদ্দিন বেপারী বলেন, “নিরপরাধ ছেলেটিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর সুষ্ঠু বিচার হোক।”
ওসি পারভেজ আহম্মেদ সেলিম জানান, ইয়াসিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি, তবে তদন্ত চলছে।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।