কেইন উইলিয়ামসন, প্যাট কামিন্সের পর তৃতীয় অধিনায়ক হিসেবে আজ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক গদা (মেস) হাতে তুলেছেন টেম্বা বাভুমা। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম তিন আসরে তিনটি ভিন্ন দল জিতলেও একটি জায়গা থেকে গেছে একই—সব ফাইনালই হয়েছে ইংল্যান্ডের মাটিতে।
আগামী দিনে টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। তবে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ভারতের আগ্রহে সম্মতি দেয়নি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরবর্তী তিন আসরের ফাইনাল আয়োজনের স্বত্বও ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডকেই (ইসিবি) দিতে চলেছে আইসিসি।
আজ লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকা–অস্ট্রেলিয়া ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ২০২৩–২৫ চক্রের আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ১৭ জুন বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কা গল টেস্ট দিয়ে শুরু হবে ২০২৫–২৭ চক্রের আসর। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নিয়ম অনুযায়ী অংশগ্রহণকারী দলগুলো একে অপরের দেশে হোম–অ্যাওয়ে ভিত্তিতে ম্যাচ খেলে থাকে। তবে ফাইনাল হয়ে আসছে ইংল্যান্ডে।
২০২১ সালে সাউদাম্পটন, ২০২৩ সালে ওভালের পর এবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল হয়েছে লর্ডসে। যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম তিন আসরের মতো আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরবর্তী তিন আসরও ইংল্যান্ডই আয়োজন করবে। এ বিষয়ে আইসিসি তাদের মনোভাব ইসিবিকে জানিয়ে দিয়েছে। ইংল্যান্ডের অবস্থানের কথা জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আয়োজনে ভারতের আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও পরবর্তী তিন ফাইনাল আয়োজনের বিষয়ে ইংলিশ ক্রিকেট সম্মতির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।’
ইসিবিকে পরবর্তী তিন ফাইনাল আয়োজনের স্বত্ব দেওয়া হতে পারে আগামী মাসেই। জুলাইয়ে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হবে আইসিসির বার্ষিক সভা। তবে তার আগে থেকেই ২০২৭, ২০২৯ ও ২০৩১ সালের ফাইনাল আয়োজনে কাজ শুরু করে দেবে ইসিবি। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের আগ্রহ বিবেচনায় না নিয়ে ইংল্যান্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আয়োজনের স্বত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তে কয়েকটি কারণ আছে।
নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে ইংল্যান্ডের গ্রহণযোগ্যতা আছে, ক্রিকেটখেলুড়ে দেশগুলোর সঙ্গে টাইমজোনও অপেক্ষাকৃত অনুকূল। এর বাইরে আছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের সময়। জুনে ইংল্যান্ডের আবহাওয়া খেলা শেষ করার জন্য তুলনামূলক ভালো। এ ছাড়া দর্শক–উপস্থিতিও একটি বড় কারণ।
ইংল্যান্ডে বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ থাকায় ফাইনালে সব দলের দর্শক–সমর্থকদেরই পাওয়া যায়। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে ভারত না থাকায় অনেকেই দর্শক শঙ্কায় ছিলেন। লর্ডসের মালিক মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) টিকিটের দাম কমিয়ে দেওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকা–অস্ট্রেলিয়া ফাইনালের প্রথম তিন দিনে ৭৫ হাজারের বেশি দর্শক মাঠে এসেছেন।
আইসিসি এখনই ভারতকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আয়োজনের জন্য অগ্রাধিকার দিচ্ছে না দর্শক ও আঞ্চলিক জটিলতার কারণে। ফাইনালে ভারত না উঠলে দর্শক উপস্থিতি ইংল্যান্ডের মতো হবে কি না সন্দেহ। আবার প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখন অস্বস্তিকর। দুই দেশের ক্রিকেট দলই একে অপরের দেশে যায় না। পাকিস্তান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠলে সেটি আইসিসির জন্য হয়ে উঠতে পারে নতুন মাথাব্যথা। সব মিলিয়েই ভারতের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল আয়োজনের আগ্রহে এই মুহূর্তে ‘হ্যাঁ’ নেই আইসিসির।