রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে টানা তৃতীয় দিনের বৈঠক ঐকমত্য কমিশন

টানা তৃতীয় দিনের মতো রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমির ‘দোয়েল মাল্টিপারপাস হলে’ এ বৈঠক শুরু হয়।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার জানান, বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। কমিশনের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান ও সফর রাজ হোসেন।

এই বৈঠকে অংশ নিয়েছেন ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। তাদের মধ্যে রয়েছেন—
বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, অধ্যাপক রোরহান উদ্দিন খান;
জামায়াতে ইসলামীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আযাদ;
এনসিপির হাসনাত আবদুল্লাহ;
গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস;
খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের;
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক;
বাংলাদেশ জাসদের মুশতাক হোসেন;
সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স;
বাসদের বজলুর রশীদ;
গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি;
এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু;
লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান;
জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা;
এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ;
বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম।

বৈঠকের সূচনাতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “আমাদের হাতে সময় খুবই কম। জুলাই মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত জাতীয় সনদ তৈরি করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গতকালের আলোচনা যেটা অসমাপ্ত ছিল, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার সেই বিষয় থেকেই আজকের আলোচনা শুরু হবে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নিয়েও গতকাল আলোচনা হয়েছে, সেখান থেকেই এগোবো।”

গত বছরের অক্টোবর মাসে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এসব কমিশনের প্রতিবেদন জমা পড়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর ১৫ ফেব্রুয়ারি এসব সুপারিশের বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন।

এই কমিশন সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার সংক্রান্ত ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত জানতে চায়। এর মধ্যে ৩৩টি দল তাদের মতামত দেয়।

পরবর্তীতে ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৪৫টি অধিবেশনের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সংলাপ সম্পন্ন করে কমিশন। কিছু দলের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। এসব আলোচনার মাধ্যমে অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পূর্ণ বা আংশিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানায় কমিশন।

কোরবানির ঈদের আগে প্রথম ধাপের আলোচনা শেষে দ্বিতীয় ধাপের বৈঠক শুরু হয় ২ জুন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ঈদের ছুটি শেষে গত মঙ্গলবার থেকে চলছে দ্বিতীয় দফার আলোচনা, যা আজ তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে।

কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান আলী রীয়াজ জানান, আগামী রোববার থেকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হবে।