যাত্রাবাড়ীতে গুলি করে হত্যা: নোয়াখালীর সাবেক এসপি আসাদুজ্জামানসহ আরও চার জনকে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত

ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় মাদ্রাসা শিক্ষক মইনুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার মামলায় নোয়াখালীর সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম পার্থ ভদ্র এই আদেশ দেন। প্রসিকিউশন বিভাগের পরিদর্শক সাইদুল ইসলাম জানান, এদিন আসাদুজ্জামানসহ পাঁচজনকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তিনটি হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

এর আগে যাত্রাবাড়ীতে মাদ্রাসা শিক্ষক মইনুল ইসলাম হত্যা মামলায় আসাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছিল। আদালত তার উপস্থিতিতে শুনানির দিন ধার্য করেন এবং সোমবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

শুনানিকালে আসাদুজ্জামান বলেন, “ঘটনার সময় আমি নোয়াখালীর এসপি ছিলাম। খবর নিয়ে জানেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নোয়াখালীতে একটা লাঠিও ব্যবহার করিনি। পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি।”

তিনি আরও বলেন, “ওই সময় নোয়াখালী থেকে ঢাকায় আমি কীভাবে আসলাম? উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাই, এরপর অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত পাঁচ মাসে আমার বিরুদ্ধে কী পেল, সেটা জানানো উচিত। আমার কোনো আপত্তি নেই, আমি ন্যায়বিচার চাই।”

শুনানি শেষে আদালত তাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

মাদ্রাসাশিক্ষক মইনুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তার বাবা কামরুল ইসলাম গত ২০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনাসহ ১৭৪ জনের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২১ জুলাই দুপুর ২টার দিকে শনিরআখড়া উড়ালসড়কে ছাত্র-জনতার মিছিলে মইনুল ইসলাম অংশ নেন। তখন স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিলে হামলা ও গুলি চালায়। এতে মইনুল গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়। নিহত মইনুল ডেমরার আহসানুল হিকমা মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন।

সরকার পতনের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশে ব্যাপক রদবদলের অংশ হিসেবে গত ১৩ মার্চ নীলফামারীর ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া নোয়াখালীর সাবেক এসপি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এদিন আসাদুজ্জামান ছাড়াও আরও চারজনকে ভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত। সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম ও ঢাকার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর রঞ্জন বিশ্বাসকে কোতোয়ালী থানার শাওন ওরফে শাওন মুফতি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অন্যদিকে, ধানমণ্ডিতে শিক্ষার্থী শামীম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম এবং আওয়ামী লীগ নেতা শাহে আলম মুরাদকে।

উল্লেখ্য, এ মামলার আসামিরা আগে থেকেই বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারা হেফাজতে রয়েছেন।