সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যে এলওসি এলাকায় পূর্ণমাত্রার সামরিক মহড়া চালাল পাকিস্তান

পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনার জেরে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) সংলগ্ন এলাকায় পূর্ণমাত্রার সামরিক মহড়া চালিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

নিরাপত্তা সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার এই সামরিক মহড়ায় গোলাবর্ষণের অনুশীলনসহ যুদ্ধপ্রস্তুতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। ইসলামাবাদ চেয়েছে একটি বার্তা দিতে—শত্রুপক্ষের সম্ভাব্য আগ্রাসনের জবাবে সশস্ত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে সেনাবাহিনী প্রস্তুত।

সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা ও সৈন্যরা এ মহড়ায় অংশ নেন। বাহিনীর হাতে থাকা উন্নত যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৌশলগত দক্ষতা প্রদর্শন করা হয় সেখানে।

এর আগের দিন বুধবার পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানায়, ভারতীয় বাহিনীর ‘উসকানিমূলক’ গুলির জবাবে কিয়ানি ও ম্যান্ডাল সেক্টরে একটি ভারতীয় চৌকি ধ্বংস করেছে তারা। পাশাপাশি, ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের চাকপুত্রা চৌকিও ধ্বংস করা হয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ‘পাল্টা হামলায়’।

গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করে আসছে দিল্লি। তবে পাকিস্তান বলছে, ওই অভিযোগের কোনো প্রমাণ ভারত এখনো দেখাতে পারেনি।

ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে, পাকিস্তানিদের দেওয়া ভিসা বাতিল করেছে এবং ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে।

জবাবে পাকিস্তান সরকার ভারতের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে শিমলা চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়েছে। সাধারণ ভারতীয়দের জন্য ভিসা বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সীমান্তের প্রধান প্রবেশপথটি বন্ধ করে দিয়েছে। দুই দেশই নিজেদের আকাশে অন্য দেশের উড়োজাহাজ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

পাকিস্তান সরকার বলছে, ভারত আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সামরিক হামলা চালাতে পারে বলে ‘নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ রয়েছে তাদের কাছে। অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার ও বুধবার তার নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের নিয়ে টানা বৈঠক করেছেন। ভারতীয় সেনাবাহিনী যাতে প্রয়োজনে হামলা চালাতে পারে, সেজন্য তিনি ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন বলেও খবর এসেছে।

পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে আরেকটি যুদ্ধ লাগার শঙ্কা তৈরি হওয়ায় পুরো ভারতীয় উপমহাদেশ অস্বস্তিতে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত করতে উদ্যোগী হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *