বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সেনার ঢাকা মহানগরের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রইস উদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সেনা।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত নগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থানে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। নব্বই দশকে প্রতিষ্ঠিত ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সেনা।
ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব স উ ম আবদুস সামাদ অভিযোগ করেন, নগরীর মুরাদপুর, কাপ্তাই রাস্তার মাথা ও বাঁশখালী উপজেলায় তাদের অবরোধে পুলিশ হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে।
সকাল থেকে নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, জিইসি, সল্টগোলা ক্রসিং, হাটহাজারী, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, নাজিরহাট সড়কের বিভিন্ন অংশে অবরোধ কর্মসূচি চলে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (বন্দর) মাহমুদুল হাসান বলেন, ইশান মিস্ত্রি ঘাট সড়কের পাশে কিছু লোক শান্তিপূর্ণভাবে স্লোগান দিয়েছে। পুলিশের অবস্থান থাকলেও তারা কেউ মূল সড়কে আসেনি, ফলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেনি।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মুরাদপুর রেলগেইট এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইনে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পুলিশ তাদের ধাওয়া করলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয় এবং পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
এসময় আন্দোলনকারীরা সুন্নীয়া মাদ্রাসা সড়কে সরে গেলে পুলিশ কয়েকজনকে আটক করে।
ইসলামী ফ্রন্ট নেতা আবদুস সামাদ জানান, সকাল ৯টা থেকে শান্তিপূর্ণ অবরোধ চলছিল। বেলা ১১টার পর মুরাদপুর এলাকায় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে তুলে নিয়ে গেছে। বাঁশখালীসহ বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও আটকের অভিযোগও করেন তিনি।
হাটহাজারীতে সড়ক অবরোধ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) কাজী মো. তারেক আজিজ। তিনি বলেন, বড় দিঘীর পাড়, বিশ্ববিদ্যালয় ১ নম্বর গেইট, হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড ও কাটিরহাট এলাকায় কিছুক্ষণ অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীরা সরে যায়। কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি।
গত ২৭ এপ্রিল গাজীপুরের হায়দারাবাদ এলাকায় একটি মসজিদের ইমাম ও খতিব রইস উদ্দিনের বিরুদ্ধে ‘শিশু বলাৎকারের’ অভিযোগ তুলে তাকে গাছে বেঁধে মারধর করে একদল মানুষ। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরদিন ভোরে জেলহাজতে তার মৃত্যু হয়।
রইস উদ্দিনের মৃত্যুকে ‘পরিকল্পিত’ হত্যাকাণ্ড দাবি করে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করে আসছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত।