পেরুর পাতাজ প্রদেশে একটি সোনার খনি থেকে অপহৃত ১৩ খনিশ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ। নিহতরা সবাই রাজধানী লিমার উত্তরে অবস্থিত ওই খনিতেই কাজ করতেন, যা পরিচালনা করে খননকারী কোম্পানি পোদেরোসা।
জানা গেছে, ওই এলাকায় অবৈধ খনন কার্যক্রম বন্ধে কাজ করছিলেন এই শ্রমিকরা। এসময় খনির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টায় থাকা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র তাদের অপহরণ করে খনির একটি সুড়ঙ্গের ভেতর জিম্মি করে রাখে। এক সপ্তাহ ধরে অপহৃতদের পরিবারের কাছে হুমকি পাঠায় তারা।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় অপহরণকারীরা ওই ১৩ জনকে গুলি করে হত্যা করে। ধারণা করা হচ্ছে, ভিডিওটি হত্যাকারীরাই ধারণ করেছে। যদিও এখনও স্পষ্ট নয় কেন এই শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের কেউ কেউ পোদেরোসার নিয়োগপ্রাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন বলেও কিছু প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
পোদেরোসা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অবৈধ খনন বন্ধে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় তারা হতাশ। কোম্পানিটি জানায়, ওই অঞ্চলে সহিংসতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং তাদের কর্মীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
২০২০ সাল থেকে পোদেরোসার কয়েকটি খনি অবৈধ খননকারীদের দখলে চলে যাওয়ায় কিছু কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হয়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে একই জেলার লা সিয়েনাগা এলাকায় এক খনিতে হামলা চালিয়ে ঠিকাদারদের ওপর হামলা ও দুইজনকে হত্যা করেছিল একই ধরনের চক্র। ওই মাসেই খনিতে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী একটি উচ্চ-ভোল্টেজ টাওয়ার উড়িয়ে দেয় তারা।
অবৈধ খনন এবং সংঘবদ্ধ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ব্যর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করে পোদেরোসা সরকারের কাছে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। কোম্পানিটি বলছে, এই অপরাধীরা কার্যত দায়মুক্তির সুবিধা নিয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
পেরু বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্বর্ণ উৎপাদক দেশ, যা প্রতি বছর ১০০ টনের বেশি সোনা উত্তোলন করে এবং এটি বৈশ্বিক সরবরাহের প্রায় ৪ শতাংশ।