খাদ্যসংকট, সহিংসতা ও নিরাপত্তাহীনতায় প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত অতিক্রম করছে হাজারো রোহিঙ্গা
প্রতিবেদক: নিজস্ব প্রতিবেদক
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি (AA) এবং আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (ARSA)-এর মধ্যে চলমান সংঘাত, খাদ্য-চিকিৎসা সংকট ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আবারও বেড়েছে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন (RRRC) জানিয়েছে, গত এক বছরে নতুন করে ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছেন।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাষ্য অনুযায়ী, আরাকান আর্মি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বাড়িয়েছে। ARSA-কে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে অনেক পরিবারকে ঘরছাড়া করা হয়েছে। অনেকে ব্যারাক নির্মাণে বাধ্য হচ্ছেন, আবার কারও খাদ্য কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সীমান্ত পার হওয়ার সময় মাথাপিছু ঘুষ দিতে হচ্ছে পাঁচ হাজার কিয়াত।
সীমান্তের অন্তত ২২টি পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ হচ্ছে বলে জানায় বিজিবি। কেউ কেউ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে পৌঁছাচ্ছেন। সর্বশেষ গত শনিবার পতেঙ্গা সৈকত থেকে ৩৫ রোহিঙ্গাকে আটক করে র্যাব।
বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান:
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে এবং জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে আলোচনা চলছে, যেন মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:
জাতিসংঘ উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, রাখাইনের সহিংসতা মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে সহায়তা তহবিলের ঘাটতির কারণে সংকট আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা UNHCR।
বর্তমানে বাংলাদেশে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ, যার মধ্যে ১ লাখ ১৮ হাজার গত এক বছরে এসেছে।