ইসলামী ব্যাংকের ফেইসবুক পেইজ হ্যাকড, হাজারো কর্মীর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ

বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের ফেইসবুক পেইজ হ্যাকারদের কবলে পড়েছে।

ব্যাংকটির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান নজরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার ভোরে জানতে পেরেছেন, ব্যাংকের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজ হ্যাকড হয়ে গেছে। তিনি বলেন, “আইটি বিশেষজ্ঞরা সমাধানের জন্য কাজ করছেন।”

ভোরে ব্যাংকের পেইজে দেখা যায়, প্রোফাইল ও কভার ফটো সরিয়ে হ্যাকাররা নিজেদের লোগো বসিয়েছে। তারা নিজেদের পরিচয় দিয়েছে ‘এমএস ৪৭০ এক্স’ নামে। এরপর হ্যাকার দলের নামে খোলা একটি ফেইসবুক পেইজে পোস্ট করা হয়, “ব্যাংকের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং শিগগিরই তাদের ফেইসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটে সাইবার আক্রমণ চালানো হবে।” এই পোস্টটি আবার শেয়ার করা হয় হ্যাকারদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া ইসলামী ব্যাংকের পেইজ থেকে। তবে দুপুর থেকে ব্যাংকের পেইজ আর দেখা যায়নি।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক মুক্ত করে। গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণ থাকাকালে কোনো পরীক্ষা বা যাচাই-বাছাই ছাড়াই মৌখিক নির্দেশে হাজার দশেক ব্যক্তি নিয়োগ পেয়েছেন। এতে জনবল বেড়ে দাঁড়ায় ২২ হাজারে, যা ২০১৬ সালে ছিল সাড়ে ১৩ হাজার।

মৌখিক নির্দেশে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে ৫ হাজার ৩৮৫ জনকে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর ডাকা হয়। কিন্তু মাত্র ৪১৪ জন পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষায় অংশ না নেওয়াদের দায়িত্ব থেকে অবমুক্ত রাখা হয়েছে।

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান জানান, “যেহেতু তারা যেকোনোভাবেই ব্যাংকের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন এবং পরীক্ষায় অংশও নেননি, তাই যোগ্যদের বাছাইয়ের জন্য অনৈতিকভাবে নিয়োগ পাওয়া সবাইকে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। ব্যাংক মানবিক দিক থেকে বিষয়টি দেখছে; যারা টিকবে তাদের নেওয়া হবে। বাকিদের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য আবারও সুযোগ দেওয়া হবে, প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।”

তিনি আরও জানান, দায়িত্ব অবমুক্ত থাকাদের বিষয়ে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করবে ব্যবস্থাপনা বিভাগের।

ফেইসবুক পেইজ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর হ্যাকাররা একটি বার্তা দিয়ে কিছু সময়ের মধ্যে তা সরিয়ে নেয়। সেখানে লেখা ছিল, “বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের তৎপর কর্তৃপক্ষের অনৈতিক ও অন্যায় আচরণে এমএস ৪৭০এক্স তাদের পেইজ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। হাজার হাজার কর্মীর ভবিষ্যৎ রক্ষা করা হবে। অবিলম্বে অন্যায় চাকুরিচ্যুতির উপর পুনর্বিবেচনা ঘোষণা করা হোক।”