স্কুল ফিডিং-এ দুধের সঙ্গে ডিম অন্তর্ভুক্তির পরামর্শ দিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে দুধের সঙ্গে ডিমও অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের স্কুল ফিডিংয়ে দুধ দেওয়া হচ্ছে, সেখানে ডিমও যুক্ত করতে হবে। কারণ অনেক দারিদ্র্য ছেলে-মেয়ে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে স্কুলের খাবার তালিকায় ডিম অন্তর্ভুক্ত করলে শিক্ষার্থীদের অপুষ্টি দূরীকরণে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”

এই পরামর্শ তিনি শুক্রবার ঢাকার ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দিয়েছেন, যা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল ও ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশ শাখা।

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “ডিম এমন একটি খাবার, যার সঙ্গে দেশের প্রায় সব শ্রেণির মানুষ কোনো না কোনোভাবে জড়িত। এর উৎপাদন থেকে ভোগ পর্যন্ত প্রত্যেক স্তরে মানুষের অংশগ্রহণ রয়েছে। গরুর মাংস সবাই ক্রয় করতে না পারলেও ডিম একটি সাশ্রয়ী খাদ্য, যা সবার নাগালে।”

তিনি বাজারে ডিমের দাম বাড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “মৌসুমভেদে ডিমের দর ওঠা-নামা করে। অনেক সময় অনিয়ম ও অপ্রয়োজনে মধ্যস্বত্বভোগীদের হস্তক্ষেপের কারণে দাম বেড়ে যায়। এ প্রেক্ষাপটে ডিমের বাজারকে গুরুত্ব দিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট ও পর্যবেক্ষণ জোরদার করতে হবে। ডিমের দাম বাড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের অনিয়ম ও অসাধু কাজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ফরিদা আখতার আরও বলেন, দেশের ৮০ শতাংশ ডিম প্রান্তিক খামারিদের কাছ থেকে আসে। গ্রামীণ দরিদ্র নারীরাও দু-একটি করে মুরগি পালন করে নিজেদের পরিবারের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে পুষ্টি সরবরাহে অবদান রাখছেন। তিনি কৃষিতে কীটনাশক ব্যবহারের কারণে মুরগি পালন ‘হুমকির মুখে’ পড়ছে মন্তব্য করেন এবং হাওড়ের হাঁসের ডিমের প্রসার ও প্রচারের আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা ‘কমপ্লিট ফুড’ বিষয়ে আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “সেখানে সবজি, মাছ ও মাংসের কথাও বলতে হবে। ক্যান্সার অনেক বেড়ে গেছে। প্রায় ঘরে ঘরে নারীরা ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডিম খেলে ক্যান্সার কমে—এই বার্তাটি ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু সুফিয়ান। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাকিলা ফারুক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইলিয়াস হোসেন এবং অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান সিকদার।