বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোনসহ সংঘবদ্ধ অনলাইন প্রতারক চক্রের তিন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির নিউমার্কেট থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো মো. আসিফুর রহমান (২০), মো. আল আমিন (২৫) ও অনামিকা (২৪)।
শুক্রবার (১৬ মে ২০২৫) সাভার ও মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
নিউমার্কেট থানা সূত্রে জানা যায়, নিউমার্কেট থানা এলাকার বাসিন্দা আফরোজা হোসেন গত ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে ফেসবুক ব্যবহার করার সময় “দোয়া কবুলের অলৌকিক গল্প” নামক একটি গ্রুপে একটি পোস্টে “তদবীর রুকাইয়া” লেখা দেখতে পান। তিনি পোস্টদাতার মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করলে, আইডি ব্যবহারকারী একজন অজ্ঞাতনামা নারী তাকে জানায়, তাকিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা যায়। পরে “Tahqiya” নামক আরেকটি ফেসবুক আইডির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। আফরোজা হোসেন সেই আইডিতে যোগাযোগ করলে, তাকে জানানো হয় যে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।
একপর্যায়ে তিনি তার সন্তান না হওয়ার সমস্যার কথা জানালে, কথিত সমাধানদাতা ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ সন্ধ্যায় একটি মোবাইল নাম্বারে ৬,১০০ টাকা পাঠাতে বলেন। আফরোজা হোসেন সরল বিশ্বাসে টাকা পাঠান। ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে সেই নারী তাকে ব্যবহৃত জামা-কাপড়, শ্যাম্পু, সাবান, তেল ও ২৫ ভরি স্বর্ণ পাঠাতে বলেন এবং জানান, সবকিছু ঝাড়ফুঁক করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফেরত দেওয়া হবে। এসব ব্যবহার করলে সন্তান হবে বলেও দাবি করেন তিনি। আফরোজা হোসেন এস এ পরিবহনের মাধ্যমে উক্ত সামগ্রী পাঠিয়ে দিলে, ওই নারী তাকে মেসেঞ্জার থেকে ব্লক করে দেয়। এরপর তিনি প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন এবং নিউমার্কেট থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ১৬ মে রাত ৩টা ২০ মিনিটে সাভার থেকে আসামি আসিফুরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে একই দিন সকাল ১০টায় মোহাম্মদপুরের ৪০ ফিট বছিলা ফিউচার হাউজিং এলাকার একটি বাসা থেকে আল আমিন ও অনামিকাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকালে আসিফুরের হেফাজত থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন, আল আমিন ও অনামিকার কাছ থেকে ৮৫ ভরি স্বর্ণালংকার, কপারযুক্ত ২৬ ভরি স্বর্ণ, নগদ ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, একটি আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স ও একটি স্যামসাং এস২৪ আলট্রা জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ অনলাইন প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের নাম করে এভাবে প্রতারণা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও স্বর্ণ সংগ্রহ করেছে বলে স্বীকার করেছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।