ইশরাককে শপথ না পড়ানোয় নগর ভবনে লাগাতার অবস্থান, কার্যত অচল ডিএসসিসি

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে নগর ভবনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন তার সমর্থকরা।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে তারা নগর ভবনের প্রধান ফটকে এসে জড়ো হন। সেখানে একটি অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে জাতীয় সঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান বাজানো হচ্ছে।

গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। কোনো দাপ্তরিক কাজ হচ্ছে না, সেবা নিতে আসা লোকজন পড়েছেন দুর্ভোগে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের অফিস নগর ভবনে থাকায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নিজ কার্যালয়ে যেতে পারছেন না।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্রদল কর্মী সুমন হাসান বলেন, “সরকার এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অন্যায় করছে। বিশেষ করে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সব নাটের গুরু। আমরা ইশরাক ভাইকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

লালবাগের ব্যবসায়ী আদিলুর রহমান বলেন, “ইশরাককে ষড়যন্ত্র করে হারানো হয়েছিল। এখন কোর্ট তাকে মেয়র ঘোষণা করেছে। মেয়াদ যতটুকু আছে, ততটুকু সময় মেয়রের চেয়ারে তাকেই দেখতে চাই।”

সোমবার নগর ভবনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন সাবেক সচিব মশিউর রহমান। তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। “স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিবৃতি চরম মিথ্যাচার। আগামীকালের মধ্যে দাবি মানা না হলে সরকারকেই খেসারত দিতে হবে।”

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দক্ষিণ সিটির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে প্রায় পৌনে ২ লাখ ভোটে হেরেছিলেন ইশরাক।

তবে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর গত ২৭ মার্চ নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ওই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে তাকে মেয়র ঘোষণা করে।

তবে এখনও তার শপথ অনুষ্ঠান হয়নি।

শনিবার ইশরাক স্থানীয় সরকার বিভাগে নিজেকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেন এবং সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেন।

এক সাংবাদিক জানতে চাইলে তিনি বলেন, “স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বা অন্য কোনো উপদেষ্টার সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত বিরোধও নাই, ব্যক্তিগত সম্পর্কও নাই।”

অন্যদিকে, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ইশরাকের শপথ নিয়ে সরকার কয়েকটি জটিলতায় পড়েছে। সেগুলো নিরসন না হলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।

একই সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক বলেন, “আমি কোনো রাজনৈতিক দল বা একক ব্যক্তি বা সরকারকে দোষ দিচ্ছি না। আমরা এর সমাধান চাই।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *