বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, দেশের মাত্র একজন ব্যক্তি ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চান না। শুক্রবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাপানে অবস্থানরত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা আব্বাস বলেন, “খুব দুঃখের সঙ্গে বলছি, মুহাম্মদ ইউনূস সাহেব জাপানে বসে বিএনপির বদনাম করেছেন। দেশের বাইরে বসে এসব বলতে তার লজ্জা লাগেনি। তিনি বলেন, একটি দল নির্বাচন চায়। আর আমরা বলি, একজনই নির্বাচন চান না— তিনি হলেন ড. ইউনূস।”
জাপানের টোকিওতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, “নির্বাচন এই বছরের শেষে ডিসেম্বরে অথবা সর্বোচ্চ জুনে অনুষ্ঠিত হবে।” তিনি আরও বলেন, দেশে সব দল নয়, একটি মাত্র দলই ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়।
এই বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, “বিএনপি শুরু থেকেই বলে আসছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। এটা ইউনূস সাহেব নিজেই প্রথম বলেছিলেন। পরে তিনি তার কথা বদলে জুনের কথা বলছেন। কিন্তু জুনে এই দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হলে তা ডিসেম্বরেই হতে হবে।”
তিনি বলেন, “এই নির্বাচন আমরা আদায় করব। না হলে দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।”
‘বিদেশি আমদানিতে সংস্কার নয়’
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, “সরকার সংস্কার সংস্কার বলতে বলতে অনেক বিদেশি পরামর্শককে আমদানি করেছে। শহীদ জিয়াউর রহমান বহু সংস্কার করেছেন, কিন্তু বিদেশ থেকে কাউকে আনেননি। এখন যেভাবে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে তারা আদৌ নির্বাচন দিতে চায় না।”
তিনি আরও জানান, জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে তার রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে বিএনপির শীর্ষ নেতারা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, সালাহ উদ্দিন আহমদ, এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ আরও অনেকে।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সবাই মোনাজাতে অংশ নেন। পরে জাতীয়তাবাদী উলামা দলের উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া মাহফিলেও অংশ নেন নেতারা।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর সেনাবাহিনীতে এক রদবদলের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন। পরে তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক সেনা বিদ্রোহে নিহত হন। বিএনপি দিনটিকে ‘শাহাদাত দিবস’ হিসেবে পালন করে।