জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে বিএনপির শ্রদ্ধা ও কর্মসূচি পালন

জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, সালাহ উদ্দিন আহমদ, এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান।

পুষ্পমাল্য অর্পণের পর তারা প্রয়াত রাষ্ট্রপতির আত্মার মাগফেরাত কামনায় মোনাজাতে অংশ নেন। পরে জাতীয়তাবাদী উলামা দলের উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে অংশ নেন তারা।

শ্রদ্ধা জানানোয় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, মাহবুব উদ্দিন খোকন, লুৎফুজ্জামান বাবর, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মীর নেওয়াজ আলী, মীর আলী নেওয়াজ, সাইফুল আলম নিরব, তাইফুল ইসলাম টিপু, এসএম জাহাঙ্গীর, ঢাকা মহানগরের আমিনুল হক, তানভীর আহমেদ রবিনসহ আরও অনেকে।

এর আগে প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের জিয়ার সমাধিতে আসতে দেখা যায়। তাদের অনেকের পোশাকে কালো ব্যাজ ছিল এবং তারা ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া, লও লও লও সালাম’, ‘জিয়া তোমায় ভুলিনি, ভুলব না, স্বাধীনতার অপর নাম জিয়াউর রহমান’—এমন নানা স্লোগান দেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, মুক্তিযোদ্ধা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দল, তাঁতীদল, মৎস্যজীবী দল, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন আলাদাভাবে জিয়ার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দুপুরে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউর টি অ্যান্ড টি কলেজ, হাই কোর্ট মাজার, গুলশান ২ নম্বর ঢাকা সিটি করপোরেশনের মার্কেট, বাসাবো খেলার মাঠ, ধানমন্ডি আবাহনী মাঠ, ধানমন্ডি কেএফসি, কলাবাগান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ মহানগরের বিভিন্ন স্থানে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ২৬ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত আট দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা হয় এবং বিভিন্ন মসজিদে গণদোয়ার আয়োজন করা হয়। সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয় এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।

এ ছাড়া বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জিয়াউর রহমানের ছবি সম্বলিত পোস্টার প্রকাশ এবং পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুব দলের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প চালু করা হয়েছে, যেখানে দিনব্যাপী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা দুঃস্থ রোগীদের সেবা দিচ্ছেন এবং বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর সেনাপ্রধান হন জিয়াউর রহমান। একই বছরের ৭ নভেম্বর ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লবের’ পর রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এএসএম সায়েমের নেতৃত্বে তিনি উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এবং ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি।

১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল সৈন্যের গুলিতে নিহত হন জিয়াউর রহমান। বিএনপি দিনটিকে ‘শাহাদাত দিবস’ হিসেবে পালন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *