বাংলাদেশ ব্যাংকে একসময় চাকরি পেয়েছিলেন মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী। তবে তিনি সেই চাকরি না করলেও তার নামেই ১২ বছর চাকরি করে যান আরেকজন।
নাম ও পরিচয় পাল্টে ওই ব্যক্তি ওয়ারেছ আনসারী পরিচয়ে ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করছিলেন। সহকারী পরিচালক পদে যোগ দিয়ে পরে দুটি পদোন্নতিতে হন যুগ্ম পরিচালক।
সম্প্রতি একটি মামলার তদন্তে পুলিশের কাছে এই জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে। তার প্রকৃত নাম মো. শাহজালাল।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শাহজাহান মিয়াকেও সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, “১২ বছর ধরে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে কাজ করেছেন। আমাদের তদন্তে বিষয়টি উঠে আসার পরপরই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
“এই ঘটনায় আরেকজনের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে, তাকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে আরও কেউ জড়িত থাকলে তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে। তদন্ত কমিটি এ নিয়ে কাজ করছে।”
প্রকৃত ওয়ারেছ আনসারী বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) হিসেবে কর্মরত আছেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জে।
তিনি জানান, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে তার চাকরি হলেও একই সময়ে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি পেয়ে তিনি ব্যাংকে যোগ না দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে চলে যান।
ওই সুযোগে জালিয়াতির মাধ্যমে ওয়ারেছ আনসারী পরিচয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি নেন শাহজালাল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “ওয়ারেছ আনসারী নামে যিনি এতদিন চাকরি করেছেন, তার জাতীয় পরিচয়পত্রে ঠিকানা গাজীপুর দেখানো হলেও তার আসল বাড়ি টাঙ্গাইলে। জালিয়াতির মাধ্যমে পরে জাতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করেছেন তিনি।”
প্রকৃত ওয়ারেছ আনসারী বলেন, “আমি বাংলাদেশ ব্যাংকে কখনও চাকরি করিনি। বিষয়টি গতকাল জানতে পেরেছি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এখনও আমার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করা হয়নি। এটা পুরোপুরি বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বলতা। আমি চাই বিষয়টির সমাধান হোক। প্রয়োজন হলে আইনি পদক্ষেপ নেব।”
ঘটনা সম্পর্কে জানতে শাহজালালকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।