“ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় জামায়াত”

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলীয় প্রতীকসহ নিবন্ধন পুনর্বহালের গেজেট প্রকাশের পরদিন, বুধবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এ দাবি তোলে দলটি।

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ। আলোচনায় প্রবাসী ভোট, পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) ভোট পদ্ধতি ও অনলাইন ভোট নিয়েও মতামত তুলে ধরা হয়।

বুধবার সকালে নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বৈঠক করেন জামায়াতের প্রতিনিধিরা। দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীক পুনর্বহালের পর এটি দলটির পক্ষ থেকে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।

বৈঠক শেষে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “আমাদের আজকের মূল ইস্যু ছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচন। আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, কেয়ারটেকার সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার—যে ফর্মেই হোক, জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি সরকার থাকে এবং কমিশন তার অধীনেই কাজ করে। সব দল এতে একমত।”

তিনি বলেন, “এই সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনেক বেশি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা চাই, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হোক। এটি শুধুমাত্র এ সময়ের জন্য নয়, ভবিষ্যতের জন্যও এমন একটি কাঠামো গড়ে তুলতে চাই যাতে অন্তর্বর্তী সরকার এসে এই নির্বাচনের দায়িত্ব নিতে পারে।”

ইসি সম্পর্কে আস্থা আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অবজার্ভ করছি। যেখানে তারা সঠিক কাজ করছে, আমরা বলছি ঠিক আছে। কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলব। যদি ব্যত্যয় ঘটে, তখন কথা বলব।”

বৈঠকে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ভোটের বিষয়েও আলোচনা হয়। আযাদ বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পিআর পদ্ধতি একটি সুন্দর ব্যবস্থা। ইসির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা এ দাবি জানিয়েছি।”

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে পোস্টাল ও অনলাইন পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।”

নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপনের কথা উল্লেখ করে আযাদ বলেন, “প্রতীকসহ নিবন্ধন পুনর্বহাল করায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। অন্যায় ও অবিচার করে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ন্যায়ের কণ্ঠ রোধ করা যায় না।”

তিনি অভিযোগ করেন, “বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ও দলীয় প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এটি ছিল চরম অন্যায়। আমাদের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিল। গতকালের গেজেট সেই অধিকার আদালতের আদেশে আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছে এবং দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “গেজেট প্রকাশে গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে। আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। এখন দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ নেব। জনগণের পছন্দের প্রতীকে ভোট দেওয়ার বাধা দূর হয়েছে।”

বৈঠকে আযাদের সঙ্গে ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার।