চার দফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করে মহাসমাবেশ শেষ করলো হেফাজতে ইসলাম

চার দফা দাবিতে দুটি কর্মসূচি ঘোষণা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ শেষ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। শনিবারের এই সমাবেশে কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের মহাসচিব সাজিদুর রহমান।

প্রথম কর্মসূচি হিসেবে নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আগামী তিন মাসের মধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন করবে হেফাজতে ইসলাম। দ্বিতীয় কর্মসূচি অনুযায়ী, ২৩ মে বাদ জুমা চার দফা দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে।

সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। অনুষ্ঠানে ১২ দফা ঘোষণাপত্র পাঠ করেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর মাহফুজুল হক।

নায়েবে আমীর আহমদ আবদুল কাদের বলেন, “আমাদের দাবি স্পষ্ট, আমরা মুসলিমদের পক্ষ থেকে দাবি করছি, যে নারী সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে, তা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। এই কমিশন রেখে কোনো সংস্কার হবে না। আমরা দাবি করছি, এই কমিশন যে প্রস্তাব পেশ করেছে, তা প্রত্যাহার করতে হবে। জাতি তা প্রত্যাখ্যান করেছে। আর কোনো বিকল্প নেই।”

রাখাইনে মানবিক করিডোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দেশের জনগণের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। তাদেরকে এড়িয়ে, না জানিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ জনগণ মানবে না, মানবে না।”

শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যা’ হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আমরা দাবি করেছি, জুলাই-অগাস্টের গণহত্যার বিচার করতে হবে। সাথে সাথে আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বিচার করতে হবে। বিচারের আগ পর্যন্ত তার কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোনো সুযোগ থাকতে পারে না।”

হেফাজতের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তিনি বলেন, “সম্প্রতি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন কোরআনবিরোধী প্রতিবেদন দাখিল করেছে। সাম্রাজ্যবাদের ফান্ডখোর কুখ্যাত নারীবাদীরা এদেশের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, বিধি-বিধান, ঐতিহ্য ও পরিবারকাঠামো ধ্বংস করার পশ্চাত্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে।”

অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, “এনজিওবাদী গোষ্ঠীর প্ররোচনায় এমন কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিবেন না, যা কোরআন-সুন্নাহর বিরুদ্ধে যায়। এক্ষেত্রে আমরা কোনো ছাড় দেবো না। এই বিতর্কিত কমিশন ও কোরআনবিরোধী প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিল করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম অংশীদার আলেম-ওলামার পরামর্শ নিয়ে নতুন কমিশন গঠন করুন।”

মোনাজাতের মাধ্যমে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করেন হেফাজতের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। এর আগে বক্তব্য দেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণ) হাসনাত আবদুল্লাহ ও আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *